ক্যারিয়ার গঠনে গাণিতিক দক্ষতার ব্যবহার: মানুষের জীবনের সাথে জড়িত কয়েকটি প্রয়ােজনীয় বিষয়ের মধ্যে দৈনন্দিন হিসাব-নিকাশ অন্যতম। জীবনের প্রতিটি পর্যায়ে, প্রতিটি স্তরে, প্রাত্যহিক কর্মকাণ্ডে মানুষকে নানারকম হিসাব করতে হয়। সভ্যতার শুরু থেকেই হিসাব-নিকাশের এ ধারা চলে আসছে।
ক্যারিয়ার গঠনে গাণিতিক দক্ষতার ব্যবহার
মানুষের হিসাব-নিকাশের এ ধারাকে বইয়ের ভাষায় বলা হয় গাণিতিক দক্ষতা। গাণিতিক দক্ষতা বা গাণিতিক জ্ঞান হচ্ছে গণিতের সাধারণ ধারণাকে জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে কাজে লাগানাে। গাণিতিক জ্ঞানসম্পন্ন মানুষ সহজেই তার প্রাত্যহিক ও সামগ্রিক জীবনের হিসাব-নিকাশের প্রয়ােজনগুলাে মেটাতে পারে।
গণনা করতে পারা, যােগ বিয়ােগ, হিসাব রাখা, পরিমাণ ও পরিমাপ বােঝা, ভূমি বা জমির হিসাব বােঝা, পরিসংখ্যান বােঝা ইত্যাদি হচ্ছে গাণিতিক দক্ষতার উদাহরণ। গাণিতিক দক্ষতার তিনটি স্তর রয়েছে; যেমন:
- ১. সংখ্যা পরিচয় ও সাধারণ যােগ-বিয়ােগ, সাধারণ হিসাব-নিকাশ (প্রাথমিক ধারণা)
- ২. প্রয়ােজনীয় জীবনঘনিষ্ঠ গাণিতিক দক্ষতা
- ৩. উচ্চতর গাণিতিক দক্ষতা
গাণিতিক দক্ষতার গুরুত্ব
মানব জীবনে গাণিতিক দক্ষতার বিশেষ প্রভাব রয়েছে। মানুষ নিজের অজান্তেই গাণিতিক দক্ষতার সাহায্যে সকল কাজ করে থাকে। যেমন: সংসারের বাজেট, ব্যবসায়ে আয়-ব্যয়ের হিসাব থেকে শুরু করে দৈনন্দিন জীবনের যাবতীয় হিসাব-নিকাশ করা ।
গাণিতিক দক্ষতা মানুষকে যৌক্তিক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে; এর মাধ্যমে মানুষ সবকিছু যুক্তি দিয়ে চিন্তা করতে শেখে। সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রেও গাণিতিক দক্ষতার বিশেষ ভূমিকা রয়েছে।
যেমন একজন কৃষক জমিতে ফসল বােনা থেকে শুরু করে ফসল ঘরে তােলা পর্যন্ত যাবতীয় কাজের মূল্য নির্ধারণ করেন। তার বিনিয়ােগের লাভ-ক্ষতি তিনি বুঝতে পারেন। ফলে পরবর্তীতে তার পক্ষে চাষাবাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সহজ হয়। এমনিভাবে মানুষের জীবনে গণিত অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত।
গাণিতিক দক্ষতা অর্জনের উপায়
গাণিতিক দক্ষতা অর্জনের জন্য প্রথমেই প্রয়ােজন গণিতের প্রাথমিক বিষয়গুলাে আয়ত্তে নেয়া। এরপর জীবনঘনিষ্ঠ বিভিন্ন হিসাব-নিকাশ গাণিতিক পন্থায় সম্পন্ন করলে গাণিতিক দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে। ধাপে ধাপে বিভিন্ন কঠিন ও জটিল গাণিতিক সমস্যা সমাধান করার চেষ্টা করতে হবে।
দৈনন্দিন হিসাব-নিকাশ, নিজের ঘরের পরিমাপ, জমির মাপ-ঝােখ ইত্যাদি নিজেই করার চেষ্টা করতে হবে। গাণিতিক দক্ষতায় অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের সংস্পর্শে এসেও গাণিতিক দক্ষতা অর্জন করা সম্ভব । এছাড়া গণিতের উপর বিভিন্ন আলােচনা সভা, সেমিনার, প্রশিক্ষণ ও কর্মশালায় অংশগ্রহণ করে গাণিতিক দক্ষতার উন্নয়ন ঘটানাে যায়।
ক্যারিয়ার গঠনে গাণিতিক দক্ষতার ব্যবহার
একজন শিক্ষার্থী জীবনে নানা চড়াই-উত্রাই পেরিয়ে ভবিষ্যৎ জীবনের দিকে এগিয়ে যায়। এসব চড়াই-উত্রাই পার হওয়ার জন্য নানান হিসাব-নিকাশ, যােগ-বিয়ােগ করে অগ্রাধিকার চিহ্নিত করতে হয়। এসব করার জন্য গাণিতিক দক্ষতা ব্যবহার করা হয়। ক্যারিয়ার গঠনের ক্ষেত্রে গাণিতিক দক্ষতার তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
কখনাে কোনাে একটি কাজ অল্প সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করতে হয়; যারা গাণিতিকভাবে দক্ষ তারা বুঝতে সক্ষম। হয় যে কত গতিতে কাজ করলে যথাসময়ে কাজটি সম্পন্ন হবে। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি পরীক্ষায় বা নিয়ােগ পরীক্ষায় গাণিতিক দক্ষতা নিরূপণের জন্য প্রশ্ন করা হয়।
এসব প্রশ্নের উত্তর দিতে হলে গাণিতিক দক্ষতা অর্জন করা আবশ্যক। কর্মক্ষেত্রেও বিভিন্ন সময় পরিসংখ্যানভিত্তিক কিছু কাজ এসে পড়ে, যা গাণিতিক দক্ষতা ছাড়া সম্পাদন করা সম্ভব নয় । এজন্য ক্যারিয়ারকে সুগঠিত করার জন্য গাণিতিক দক্ষতাকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে।
এই ধরনের আরও পোষ্ট পেতে আমাদের poramorso24.com নিয়মিত ভিজিট করুন । ধর্যসহকারে পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
আারও পড়ুন