প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষতা অর্জন

প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষতা অর্জন

প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষতা অর্জন: সৃষ্টির শুরু থেকে মানুষ নিজ হাতে সব কাজ করত। ধীরে ধীরে মানুষ চিন্তা করতে লাগল কীভাবে সহজে ও দ্রুত কাজ করা যায়। প্রয়ােজন আবিষ্কারের জননী” এ প্রবাদকে সার্থক করে মানুষ ধীরে ধীরে এমন সব জিনিস এবং কাজের পদ্ধতি আবিষ্কার করতে লাগল যা তাদের কায়িক ও মানসিক শ্রমকে অনেকটাই কমিয়ে দিল ।

প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষতা অর্জন

প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষতা অর্জন

মানুষের কাজকে সহজ ও দ্রুত সম্পাদনের জন্য আবিষ্কৃত বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ও কর্মপদ্ধতিকে প্রযুক্তি বলা হয়। কবে, কোথায়, কখন প্রযুক্তির উদ্ভব ঘটেছে তা নির্দিষ্ট করে বলা কঠিন। মানুষ যখন তার কাজকে সহজ করার কোনাে পদ্ধতি বা যন্ত্র আবিষ্কার করা শুরু করলাে তখন থেকেই প্রযুক্তির জন্ম । 

আদিম যুগে পশু শিকারের জন্য বল্লম তৈরি করা কিংবা শুকনাে কাঠ দিয়ে আগুন আবিষ্কার করাকে প্রযুক্তির উদ্ভবের প্রাথমিক অবস্থা বলে স্বীকার করা হয়। তবে প্রযুক্তিবিদেরা মনে করেন, আধুনিক বিজ্ঞানের জন্মের সময় থেকেই মূলত প্রযুক্তির উদ্ভব। এককথায় প্রযুক্তি হলাে কিছু প্রায়ােগিক কৌশল, যা মানুষ তার পরিবেশের উন্নয়ন কাজে ব্যবহার করে। 

প্রযুক্তি ব্যবহারের গুরুত্ব

অনেক কাজ আছে যা সাধারণভাবে করতে প্রচুর সময়ের প্রয়ােজন হয়। প্রযুক্তির সাহায্যে যে কোন কাজ খুব সহজেই করা যায়। যেমন আগে ধান মাড়াই করতে অনেক সময়ের দরকার হতাে আর এখন প্রযুক্তি ব্যবহার করে অল্প সময়ে অনেক ধান মাড়াই করা যায়। এতে মানুষের সময় ও শ্রমের সাশ্রয় হয়। 

যেমন পূর্বে পরীক্ষার ফলাফল নির্ণয় করা ছিল অনেক কঠিন কাজ আর এখন মুহূর্তেই কম্পিউটার দিয়ে ফলাফল তৈরি করা যায়। এখন প্রযুক্তির সহায়তায় প্রায় নির্ভুল কাজ করা সম্ভব। 

কম্পিউটারের সাহায্যে হাজার হাজার তথ্য থেকে গবেষণা করে নির্ভুল প্রতিবেদন তৈরি সম্ভব। প্রযুক্তির সাহায্যে তাৎক্ষণিকভাবে যেকোনাে কাজের ফলাফল জানা যায়। যেমন- বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল এখন পরীক্ষার দিনই প্রকাশিত হচ্ছে। এটি প্রযুক্তি ব্যবহারের একটি বড় দৃষ্টান্ত। 

প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষতা অর্জন 

প্রযুক্তি কী, প্রযুক্তির ব্যবহার কীভাবে করতে হয়, কোথায় কোথায় প্রযুক্তির ব্যবহার করা সম্ভব, কোন যন্ত্রের কী কাজ, যন্ত্রগুলাে কীভাবে কাজ করে এসব বিষয়ে বিস্তারিত ধারণা থাকতে হবে। বর্তমানে প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে অনেকের মধ্যে ভীতি কাজ করে। প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে এই ভয় কাটিয়ে উঠে আগ্রহ নিয়ে প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে । 

আত্মবিশ্বাসী হয়ে প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু না করলে তা ব্যবহারে দক্ষতা অর্জন সম্ভব নয়। যে কোনাে বিষয়ে প্রশিক্ষণ মানুষকে দক্ষ করে তােলে। তাই দক্ষতা অর্জনের জন্য প্রয়ােজন প্রযুক্তির ব্যবহারে যথাযথ ও প্রয়ােজনীয় প্রশিক্ষণ ।

ক্যারিয়ার গঠনে প্রযুক্তির ব্যবহার 

বর্তমানে ক্যারিয়ার গঠনে প্রযুক্তির ব্যবহার অন্যতম একটি দক্ষতা। দিন দিন জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রসার যতই ঘটছে সবকিছু ততই প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে যাচ্ছে। গৃহস্থালীর কাজ থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে বেশির ভাগ কাজই এখন প্রযুক্তির মাধ্যমে সম্পাদন হচ্ছে। 

বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি ফরম তােলা ও জমা দেয়া, টাকা জমা দেয়া, পরীক্ষার ফলাফল জানা ইত্যাদি কাজ ইন্টারনেটের মাধ্যমে সম্পন্ন হচ্ছে। প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষতা থাকলে শিক্ষার্থীরা অন্যের সহযােগিতা ছাড়াই কাজগুলাে সম্পাদন করতে পারবে। 

এছাড়াও কর্মক্ষেত্রে সকল পর্যায়ে প্রযুক্তির ব্যবহার দিন দিন বেড়েই চলেছে। চাকরির আবেদন করা, পরীক্ষা দেওয়া, বাস, ট্রেন, বিমানের টিকেট ক্রয় ইত্যাদি প্রযুক্তির সাহায্যেই হচ্ছে। তাই ক্যারিয়ার গঠনে প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষতা অর্জন করার বিকল্প নেই।

আরও পড়ুন

  1. বিশ্লেষণ করা ও সৃজনশীল চিন্তন দক্ষতা
  2. ব্যক্তিগত আচরণ নিয়ন্ত্রনের উপায়
  3. ভালাে শ্রোতা হওয়ার কৌশল 
  4. ক্যারিয়ার গঠনে শ্রদ্ধা- নির্ভরশীলতা ও আন্তঃব্যক্তিক সম্পর্ক