বেলি ফুল চাষ পদ্ধতি ও  রােগ বালাই ব্যবস্থাপনা

বেলি ফুল চাষ পদ্ধতি ও  রােগ বালাই ব্যবস্থাপনা

বেলি ফুল চাষ পদ্ধতি ও  রােগ বালাই ব্যবস্থাপনা: বাংলাদেশের অধিকাংশ উৎসব অনুষ্ঠানে ব্যবহৃত ফুলের তােড়া, ফুলের মালাতে সুগন্ধীফুল হিসাবে বেলির কদর আছে। উৎসব ও অনুষ্ঠানে বেলিফুল ব্যবহৃত হয়। এটি একটি অর্থকরী ফুল।

বেলি ফুলের জাত

তিন জাতের বেলি ফুল দেখা যায়। যথা : ১। সিঙ্গল ধরনের ও অধিক গন্ধযুক্ত। ২। মাঝারি আকার ও ডবল ধরনের । ৩। বৃহদাকার ডবল ধরনের

বংশ বিস্তার :

বেলি ফুল গুটি কলম, দাবা কলম ও ডাল কলম পদ্ধতির মাধ্যমে বংশবিস্তার করা হয়।

জমি চাষ ও সার প্রয়ােগ 

বেলে মাটি ও ভারী এঁটেল মাটি ব্যতীত সব ধরনের মাটিতে বেলি ফুল চাষ করা যায়। জমিতে পানি সেচ ও পানি নিকাশের ব্যবস্থা থাকা ভালাে। জমি ৪-৫টি চাষ ও মই দিয়ে ঝুরঝুরা ও সমান করতে হবে। জমি তৈরির সময় জৈব সার, ইউরিয়া, ফসফেট এবং এমওপি প্রয়োেগ করতে হবে। প্রায় ১ মিটার অন্তর চারা রােপণ করতে হবে। চারা লাগানাের পর ইউরিয়া প্রয়োগ করে পানি সেচ দিতে হবে। 

বেলি ফুল চাষ পদ্ধতি ও  রােগ বালাই ব্যবস্থাপনা

কলম বা চারা তৈরি 

গ্রীষ্মের শেষ হতে বর্ষার শেষ পর্যন্ত বেলি ফুলের কলম বা চারা তৈরি করা যায়। চারা থেকে চারা ও সারি থেকে সারির দূরত্ব ৫০ সেমি হতে হবে। চারা লাগানাের জন্য গর্ত খুঁড়ে গর্তের মাটি রােদ লাগিয়ে, জৈব সার ও কাঠের ছাই গর্তের মাটির সাথে মিশিয়ে গর্ত ভরাট করতে হবে। এরপর প্রতি গর্তে বেলির কলম বসাতে হবে। বর্ষায় বা বর্ষার শেষের দিকে কলম বসানােই ভালাে। তবে সেচের ব্যবস্থা ভালাে হলে বসন্তকালেও কলম তৈরি করা যায়। 

টবে চারা লাগানাে

বেলি ফুল চাষ পদ্ধতি ও  রােগ বালাই ব্যবস্থাপনা

জৈব পদার্থ যুক্ত দোআঁশ মাটিতে ইউরিয়া, টিএসপি ও এমওপি সার পরিমাণমতাে মিশিয়ে টবে বেলি ফুলের চাষ করা যায়। টব ঘরের বারান্দা বা ঘরের ছাদে রেখে দেওয়া যায়। 

বেলি ফুলের পরিচর্যা 

বেলি ফুল চাষ পদ্ধতি ও  রােগ বালাই ব্যবস্থাপনা

ক) সেচ দেওয়া : 

বেলি ফুলের চাষে জমিতে সবসময় রস থাকা দরকার । গ্রীষ্মকালে ১০-১২ দিন পর পর, শীতকালে ১৫-২০ দিন পর পর ও বর্ষাকালে বৃষ্টি সময়মতাে না হলে জমির অবস্থা বুঝে ২-১ টি সেচ দেওয়া দরকার। 

খ) আগাছা দমন : 

জমি বা টব থেকে নিয়মিত আগাছা পরিষ্কার করতে হবে। খড় কেটে কুচি করে | জমিতে বিছিয়ে রাখলে সেচের প্রয়ােজন কম হয় এবং আগাছাও বেশি জন্মাতে পারে না। 

গ) অঙ্গ ছাঁটাইকরণ : 

প্রতিবছরই বেলি ফুলের গাছের ডাল-পালা ছাঁটাই করা দরকার। শীতের মাঝামাঝি সময় ডাল ছাঁটাই করতে হবে। মাটির উপরের স্তর থেকে ৩০ সেমি উপরে বেলি ফুলের গাছ ছাঁটাই করতে হবে । অঙ্গ ছাঁটাইয়ের কয়েকদিন পর জমিতে বা টবে সার প্রয়ােগ করতে হবে।

বেলি ফুলের রােগ বালাই ব্যবস্থাপনা 

বেলি ফুল গাছে ক্ষতিকারক কীট তেমন দেখা যায় না। তবে মাকড়ের আক্রমণ হতে পারে। এদের আক্রমণে পাতায় সাদা আস্তরণ পড়ে, আক্রান্ত পাতাগুলাে কুঁকড়ে যায় ও গােল হয়ে পাকিয়ে যায় । গন্ধক ঔড়া বা গন্ধক ঘটিত মাকড়নাশক যেমন- সালট্যাফ, কেলথেন ইত্যাদি পাতায় ছিটিয়ে মাকড় দমন করা যায়।। বেলি ফুলের পাতায় হলদে বর্ণের ছিটে ছিটে দাগযুক্ত এক প্রকার ছত্রাক রােগ দেখা যায়। ট্রেসেল-২ প্রয়ােগ করে এ রােগ দমন করা যায়।

বেলি ফুল চাষ পদ্ধতি ও  রােগ বালাই ব্যবস্থাপনা

বেলি ফুলের ফলন

বেলি ফুল চাষ পদ্ধতি ও  রােগ বালাই ব্যবস্থাপনা

ফেব্রুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত গাছে ফুল ফোটে। ফলন প্রতি বছর বাড়ে। লতানাে বেলিতে ফলন আরও বেশি হয়। সাধারণত ৫-৬ বছর পর গাছ কেটে ফেলে নতুন চারা লাগানাে হয়।

ফলের চাষ

বাংলাদেশে নানা ধরনের ফল জন্মায় । এ দেশের মাটি ও আবহাওয়া ফল চাষের জন্য খুবই উপযুক্ত। আমরা কলা ও আনারস চাষ সম্পর্কে জানব।

এই ধরনের আরও পোষ্ট পেতে আমাদের poramorso24.com নিয়মিত ভিজিট করুন । ধর্যসহকারে পড়ার জন্য ধন্যবাদ। বেলি ফুল চাষ পদ্ধতি ও  রােগ বালাই ব্যবস্থাপনা

আরও পড়ুন

  1. গৃহপালিত পশুপাখি পালন পদ্ধতি
  2. গােলাপ ফুল চাষ পদ্ধতি
  3. গাভী পালন পদ্ধতি
  4. গরুর মাংস ও দুধ উৎপাদনে অ্যালজি গুরুত্বপূর্ণ কেন
  5. গরু মোটাতাজাকরণ দানাদার খাদ্য তালিকা
  6. কলা চাষ যেভাবে করবেন