ভালাে শ্রোতা হওয়ার কৌশল : উদ্দেশ্য ও পরিকল্পনা- একজন গুণী মানুষ যেমন উদ্দেশ্য ও পরিকল্পনা ছাড়া কোনাে কাজ শুরু করেন না, তেমনি একজন ভালাে শ্রোতাও গঠনমূলক কোনাে উদ্দেশ্য ছাড়া কোনাে কথায় কর্ণপাত করেন না। একজন ভালাে শ্রোতা শােনার আগেই ঠিক করে নেন, কী কী তথ্য তার প্রয়ােজন এবং কীভাবে সেই সকল তথ্য তিনি মনে রাখবেন।
ভালাে শ্রোতা হওয়ার কৌশল
মনে রাখার জন্য একজন ভালাে শ্রোতা বেশ কিছু কৌশল অবলম্বন করে থাকেন; যেমন মুখ্য শব্দ মনে রাখার কৌশল (এক্ষেত্রে শ্রোতা মুখ্য শব্দসমূহ মনে রাখেন এবং প্রয়ােজনীয় তথ্যাদি জ্ঞান হিসেবে তার পূর্বে শেখা বিষয়ের সাথে একীভূত করে নেন)।
ভালাে শ্রোতা হওয়ার কৌশল
তবে, অধিক তথ্যের ক্ষেত্রে শ্রোতা সেগুলােকে নােট করে বা টুকে নেয় । শােনার আগেই যদি উদ্দেশ্য ঠিক করে নেওয়া যায়, কিংবা কী কী তথ্য জানা প্রয়ােজন তা ঠিক করে নেওয়া যায় তবে শােনা তথ্য মনে রাখা সহজ হয়।
মনােনিবেশ করা
ভালাে শ্রোতা হতে হলে অবশ্যই মনােযােগ দিয়ে শুনতে হবে। কোনাে কিছু মনােযােগ দিয়ে শােনা সহজ ব্যাপার নয়; এজন্য অনুশীলন ও চেষ্টার প্রয়ােজন। অনেকের ক্ষেত্রেই কখনাে কখনাে কারাে কথা বা বক্তব্যের প্রতি মনােনিবেশ করা কঠিন হয়ে পড়ে। অনেকে আবার খুব দ্রুত অন্যের বক্তব্যের গভীরে মনােনিবেশ করতে পারেন। এ জন্য চেষ্টা ও অনুশীলন প্রয়ােজন।
মানসিক ও শারীরিকভাবে স্থির থাকা
ভালাে শ্রোতা হতে হলে কোনাে কিছু শােনার সময় মানসিক ও শারীরিকভাবে স্থির থাকতে হবে। কেউ যখন কথা বলেন বা বক্তব্য প্রদান করেন, তখন অনেকেই বিভিন্ন রকম কাজ করেন, নানা রকম চিন্তা-ভাবনা করেন।
এ রকম অবস্থায় মনােযােগ দিয়ে শােনা যায় না। কাজেই মনােযােগী শ্রোতা হতে হলে কোনাে কিছু শােনার সময় অবশ্যই আগ্রহ থাকতে হবে এবং মানসিক ও শারীরিকভাবে স্থির থাকতে হবে।
চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলা
আমাদের দেশে গুরুজনদের চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলা বা কথা শােনাকে অনেকেই অভদ্রতা মনে করে থাকেন। কিন্তু কোনাে কিছু মনােযােগ দিয়ে শােনার ক্ষেত্রে চোখের মাধ্যমে যােগাযােগ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
শ্রোতা বক্তার চোখের দিকে তাকিয়ে অনেক কিছুই অনুমান করতে পারেন; বিষয়বস্তুর গভীরে গিয়ে মানসিক যােগাযােগ তৈরি করতে পারেন। ফলে, শােনা বিষয়টি অনেক অর্থবহ হয় ।
কথার মাঝে কথা না বলা
অন্য কেউ যখন কথা বলেন, তখন আমাদের কথা বলা উচিত নয়। কেউ কথা বলার সময় যদি আমরা কথা বলি তবে একদিকে আমরা যেমন তার কথা ভালােভাবে শুনতে পারি না; তেমনি তিনিও আমাদের কথা শুনতে পারেন না। কাজেই মনােযােগী শ্রোতা হতে হলে অন্যরা যখন কথা বলেন তখন নিজে নিশ্ৰুপ থেকে তার কথা মনােযােগ দিয়ে শােনার অভ্যাস তৈরি করতে হবে। একজনের কথা বলা শেষ হলে তারপর নিজে কথা বলতে হবে।
এ সকল উপায় আমরা যদি নিয়মিত অনুশীলনের মাধ্যমে আমাদের আচরণে পরিণত করি, তবেই আমরা ভালাে শ্রোতা হয়ে উঠতে পারব। জীবনে বিশেষ করে কর্মক্ষেত্রে সফলতা অর্জন করার জন্য ভালাে শ্রোতা হওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ।
আরও পড়ুন