মৌমাছি বা বোলতার কামড়ে ঘরোয়া চিকিৎসা

মৌমাছি বা বোলতার কামড়ে ঘরোয়া চিকিৎসা

মৌমাছি বা বোলতার কামড়ে ঘরোয়া চিকিৎসা: বাড়ির আশপাশ কিংবা রাস্তা ঘাট যে কোন জায়গায় যে কেউ মৌমাছির কামড়ে আক্রান্ত হতে পারে। তাই তৎক্ষণাৎ কিছু ঘরোয়া নিরাময় পদ্ধতিসহ কিছু জরুরী বিষয় জানা থাকলে নিজে এবং প্রিয় জন বা প্রতিবেশী ব্যথা, যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে পারে। বড় রকমের ক্ষতির হাত থেকে বাঁচতে বা বাঁচাতে পারে। যকোনো ধরনের স্বাস্থ্য টিপস পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন। ভালো লাগলে আপনার প্রিয়জনদের সাথে শেয়ার করুন।

মৌমাছির কামড়ে ঘরোয়া চিকিৎসায় করণীয়:

১। প্রথমতো মৌমাছি কামড় দিয়ে থাকে যেন ভাল করে তার হুলটা ফুটাতে পারে। মৌমাছি কামড়ের পর পরই হুল ছেড়ে যায়। এটি যতক্ষণ সময় ভেতরে থাকবে বিষের যন্ত্রণা তত তীব্র হবে। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব হুল বের করে নিয়ে আক্রান্ত স্থান সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। ২। তারপর সেই স্থানে ২০ মিনিট পর্যন্ত কাপড়ে পেঁচিয়ে বরফ লাগিয়ে রাখতে হবে। বরফ ব্যাথাকে শীতল করে এবং ফোলা ভাব কমাতে বেশ উপকারী। ৩। বাসায় যদি লেভান্ডার অয়েল থাকে, তবে কয়েক ফোঁটা ক্ষতিগ্রস্থ স্থানে মালিশ করে দিতে হবে। এটি হুলের বিষ ধ্বংস করবে দ্রুত। ৪। এক/দুটি রসুনের খন্ড থেঁতলে চেপে চেপে আহত স্থানে রস দিতে হবে। এরপর ভেজা তোয়ালে দিয়ে ২০-৩০ মিনিট ঢেকে রাখতে হবে। গ্রামাঞ্চালে পিয়াজ ও রসুনের ব্যবহার বেশী দেখা যায় এবং কাজও হয় দ্রুত। ৫। মৌমাছির কামড়ের বিষাক্ততা রোধে মধু খুব গুরত্বপূর্ণ উপাদান। আক্রান্ত স্থানে অল্প পরিমাণ মধু লেপে দিয়ে তুলা,ন্যাকড়া,পাতলা কাপড় পেঁচিয়ে ঢেকে রাখতে হবে ৩০মি-১ঘন্টা। তবে যাদের মধুর এলার্জি আছে তারা এটি করতে পারবে না। সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। যে গুরত্বপূর্ণ বিষয়টি অবশ্যই মনে রাখতে হবে তা হলো -যদি এলার্জিক কাউকে কামড় দিয়ে থাকে তবে কিছু লক্ষণ যেমনঃশ্বাস কষ্ট,জ্ঞান হারানো ইত্যাদি দেখার সাথে সাথে ঘরোয়া চিকিৎসার উপর নির্ভর না করে,ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে। নতুবা পরিণতি খারাপের দিকে যেতে পারে। তাছাড়া চুলকানি,ব্যথা, ফুলে যাওয়া এসব স্বাভাবিক লক্ষণ।

মৌমাছি বা বোলতার কামড়ে ঘরোয়া চিকিৎসা

মৌমাছি বা বোলতায় কামড়ালে যা করবেন-

যদি মৌমাছি বা বোলতা শরীরে কামড়ে বসে থাকে তাহলে তাকে তুলে ফেলুন। এগুলো সাধারণত ত্বকের সঙ্গে একই সমতলে আঁকড়ে বসে থাকে। এগুলোকে সরানোর জন্য প্রথমে আঙুলের মাথা দিয়ে আস্তে আস্তে এর ওপরে এবং পাশে আঙুল বুলিয়ে যান, পরে হঠাৎ করে ঠেলে ফেলুন। মৌমাছি বা বোলতাকে কখনো খামচে বা চিমটি দিয়ে তুলবার চেষ্টা করবেন না। কারণ, খামচানো বা চিমটি দেওয়ার কারণে বিষের থলি থেকে সব বিষ বেরিয়ে পড়ে এবং তা হুল দিয়ে আপনার শরীরে ঢুকে যেতে পারে। কিন্তু মৌমাছি বা বোলতাকে ঠেলে সরিয়ে দিলে এ ধরনের আশঙ্কা থাকে না।   হুল ফোটানো জায়গাটা বেশ লাল গরম হয়ে ফুলে যায় এবং সেখানে যন্ত্রণা হয়। তাই প্রথমেই জায়গাটিতে বরফের টুকরো চেপে ধরুন। বেশ কিছুক্ষণ এভাবে ঠান্ডা স্যাঁক দিন। এবার স্থানটিতে অ্যান্টিবায়োটিক ক্রিম লাগান। ক্রিম লাগানোর পাশাপাশি অ্যান্টিহিস্টামিন ওষুধও খেতে হবে। ব্যথার জন্য প্যারাসিটামল ওষুধ খেলেই চলবে। হুল ফোটানোর কারণে অনেকের মাথাব্যথা, বমি, শ্বাসকষ্ট, হুল ফোটার জায়ড়া ছাড়াও সমস্ত শরীরে চুলকানো, চাকা ওঠা, শরীর ফুলে যাওয়া, পেটে তীব্র ব্যথা প্রভৃতি উপসর্গ দেখা দিতে পারে। এ সব ক্ষেত্রে রোগীকে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে বা হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।

মৌমাছি বা বোলতার কামড়ে ঘরোয়া চিকিৎসা

পোকামাকড় আমাদের পরিবেশের একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। এর মধ্যে কিছু উপকারী আবার কিছু ক্ষতিকরও বটে। মাঝে মাঝে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে এইসব পোকামাকড়ের সংস্পর্শে এলে হুল ফুটানো কিংবা কামড় দেয়ার মত ঘটনা ঘটে থাকে। কামড় অনুভব করার সাথে সাথে আপনি যা করতে পারেন – ১. কামড় অনুভব করার সাথেই সাথেই উক্ত পোকা/মৌমাছি/মাকড়সাটিকে সরিয়ে দিন। কারণ যতক্ষণ পর্যন্ত এটি আপনাকে কামড়াবে ততক্ষণই বিষ শরীরে প্রবেশ করতে থাকবে। ২. নিজেকে শান্ত রাখার চেষ্টা করুন। খুব বেশি নড়াচড়া করবেন না। কারণ নড়াচড়া বেশি করলে বিষ রক্তের মধ্য দিয়ে দ্রুত ছড়িয়ে যাবে। ৩. যদি মৌমাছি আপনাকে হুল ফোটায়, তাহলে মৌমাছি সরিয়ে দেয়ার পরও হুল ভেঙ্গে চামড়ায় রয়ে যেতে পারে। এক্ষেত্রে যত দ্রুত সম্ভব ভাঙ্গা হুলটি চামড়া থেকে সরিয়ে ফেলুন। ৪. যদি আপনি পায়ে অথবা হাতে কামড় খেয়ে থাকেন তাহলে বাহু যত সম্ভব নিচু করে রাখুন। এতে বিষ সহজে ছড়াবে না। কয়েক ঘণ্টা পর যদি হাত ফুলতে শুরু করে, তাহলে হাত উচু করে ফোলা কমাতে পারেন। ৫. তবে কামড় যদি কাঁকড়া বিছের হয়ে থাকে তাহলে যত দ্রুত সম্ভব নিকটস্থ হসপিটালে যান। এখন মোটামুটি সব হাসপাতালেই কাঁকড়া বিছের বিষের এন্টি ডোট পাওয়া যায়। তাই যত দ্রুত যাবেন ক্ষতি ততই কম হবে।

মৌমাছি বা বোলতার কামড়ে ঘরোয়া চিকিৎসা

ব্যথা নিরসনের জন্য করণীয় –

১. যাই কামড়াক, সাধারণত সেগুলো যদি বিষাক্ত হয় তাহলে কামড়ের স্থানে প্রচন্ড ব্যথা হতে পারে। এই ক্ষেত্রে ক্ষতস্থানে বরফ ব্যবহার করুন। প্রথম ৬ ঘণ্টার প্রতি ঘণ্টায় ১৫/২০ মিনিট করে বরফ ব্যবহার করুন। যেসময় বরফ লাগাচ্ছেন না, সেইসময় একটি পরিষ্কার ভেজা কাপড় দিয়ে ক্ষতস্থান চেপে ধরে রাখুন এবং বরফ ব্যবহারের সময় বরফ এবং ক্ষতস্থানের মাঝে একটি পাতলা কাপড় ব্যবহার করা ভালো। ২. ক্ষতস্থানের ফোলা কমানোর জন্য যতটুকু সম্ভব ক্ষতস্থান সমতল থেকে উচুতে রাখার চেষ্টা করুন, এতে বিষ ছড়া্বে না, ফোলাও কম হবে। ৩. প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে ক্ষতস্থানের চুলকানি, ফুলে যাওয়া, ব্যথা কমানোর জন্য Benadryl কিংবা ChlorTrimeton ধরনের এন্টিহিস্টামিন ওষুধ খেতে পারেন। তবে শিশুদের ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোন ওষুধ ব্যবহার না করাই শ্রেয়। 8. ব্যথা কমানোর জন্য ফার্মেসি থেকে Benzocaine জাতীয় স্প্রে ব্যবহার করতে পারেন। তবে এলার্জিক রিএকশন এর ব্যাপারে লক্ষ্য রাখবেন। ৫. Hydrocortisone 1% cream অথবা ক্যালামাইন লোশন ক্ষতস্থানে লাগালে লালচে ভাব এবং ফোলা দূর হবে। তবে শিশুদের ক্ষেত্রে এধরনের কিছু ব্যবহার করবেন না। ৬. ৬ ঘণ্টা বরফ ব্যবহারে যদি ফোলা কমে যায়, তাহলে আস্তে আস্তে ক্ষতস্থানে গরম কাপড়ের সেঁক দিতে পারেন। এতে ক্ষতস্থানের জীবাণু সংক্রমণ বন্ধ হবে।

আরও পড়ুন: জেনে নিন কিছু দরকারী প্রাথমিক চিকিৎসা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *