শাকসবজি চাষ পদ্ধতি ও শাকসবজির গুরুত্ব: আমরা শাকসবজি প্রতিনিয়তই ফসলের জমিতে, বাগানে, হাটে বাজারে দেখতে পাই। আমরা এগুলাে নিজের জমি থেকে বা বাজার থেকে সংগ্রহ করে শাকসবজির চাহিদা পূরণ করে থাকি। এবার আমরা এসব শাকসবজির চাষ সম্পর্কে জানব। তবে চাষ পদ্ধতি জানার আগে শাকসবজির গুরুত্ব ও শাকসবজি চাষের বিবেচ্য বিষয়গুলাে আলােচনা করা দরকার।
১) শাকসবজির গুরুত্ব
শাকসবজিতে প্রচুর পুষ্টি বিদ্যমান। বিশ্বের উন্নত দেশসমূহে সবজির উৎপাদন ও ব্যবহার অতি উচ্চ পর্যায়ে পৌছেছে। আধুনিক পদ্ধতিতে শাকসবজি চাষ করে একদিকে পারিবারিকভাবে চাহিদা মেটানাে যায় এবং অন্য দিকে এগুলাে বিক্রি করে বাড়তি আয়ও করা যায়। কাজেই খাদ্য, ভিটামিন, খনিজ ও অর্থকরী ফসল হিসাবে শাকসবজি চাষ করা খুবই জরুরি।
খাদ্য হিসাবে শাকসবজি
১১. খাদ্য মান হিসাবে :
শাকসবজিতে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন এ, বি ও সি থাকে। এ ছাড়া আমিষ, ক্যালরি ও খনিজ পদার্থের উৎস হিসাবেও শাকসবজির গুরুত্ব অনেক।
১.২. ভেষজ গুণাগুণ হিসাবে শাকসবজি :
শাকসবজির ভেষজ গুণাগুণ হিসাবে অনেক অবদান রয়েছে। যেমন- শশা হজমে ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার কাজ করে। রসুনে বাত রােগ সারে ইত্যাদি।
১.৩, অর্থনৈতিক দিক থেকে শাকসবজি :
মানব দেহের জন্য শাকসবজি অত্যাবশ্যক। সুস্থ ও সবল দেহ নিয়ে বেঁচে থাকার জন্য প্রত্যেককে পর্যাপ্ত পরিমাণে শাকসবজি গ্রহণ করতে হয়। কাজেই শাকসবজি উৎপাদনে একদিকে পরিবারের চাহিদা মেটানাে যায় অন্যদিকে এগুলাে বিক্রি করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবানও হওয়া যায়।
শাকসবজি চাষ করে পতিত জমির ব্যবহার করা যায়, বৈদেশিক মুদ্রা আয়, বেকার সমস্যার সমাধান, নতুন শিল্পের সৃষ্টি ও বিকাশ ঘটে এবং মহিলা ও পারিবারিক শ্রমশক্তিকে কাজে লাগানাে যায়।
অতএব উপরের আলােচনা হতে বলা যায় যে, বাংলাদেশে শাকসবজি উৎপাদন সব দিক দিয়ে বিশেষভাবে লাভজনক এবং গুরুত্বপূর্ণ।
২. শাকসবজির শ্রেণিবিভাগ
পৃথিবীর অসংখ্য উদ্ভিদ শাকসবজি হিসাবে ব্যবহৃত হয়। আমাদের দেশে প্রায় ৬০ জাতের শাকসবজির চাষাবাদ হয়। উৎপাদন মৌসুমের উপর ভিত্তি করে এসব শাকসবজিকে তিনভাগে ভাগ করা হয়। যথা
(১) শীতকালীন শাকসবজি
(2) গ্রীষ্মকালীন শাকসবজি
(৩) বারমাসি শাকসবজি।
যেমন : শীতকালীন সবজি :
টমেটো, বাঁধাকপি, ফুলকপি, শিম, গাজর ইত্যাদি। গ্রীষ্মকালীন সবজি : করলা, ঝিঙা, পটল, ধুন্দুল, পুঁইশাক ইত্যাদি। বারমাসি সবজি : বেগুন, তেঁড়স, পেঁপে, কাঁচকলা ইত্যাদি। |
শিম, টমেটো প্রধানত শীতকালীন সবজি। বর্তমানে দুই একটি জাত বের হয়েছে যা গ্রীষ্মকালেও ফলন দিয়ে থাকে । গিমা কলমি নামক কলমিশাক প্রায় সারা বছরই চাষ করা যায়। শসা এবং খিরা মিলিয়ে শসা জাতীয় ফসল সারা বছরই পাওয়া যায়। তাই এসব সবজিকে বারমাসি সবজি বলা হয়।
৩. শাকসবজি উৎপাদনের বিবেচ্য বিষয়
আমরা এতক্ষণ বিভিন্ন শাকসবজির নাম এবং কোনগুলাে কোন মৌসুমে জন্মায় তা জেনেছি। এবার শাকসবজি উৎপাদনের সাথে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াবলি সম্পর্কে জেনে নেই। কোনাে ফসল তথা শাকসবজি চাষ বা উৎপাদন করার পূর্বে নিম্নলিখিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াবলি বিবেচনা করা প্রয়ােজন। ভালাে বীজ, বীজতলার জমি নির্বাচন ও তৈরি, বীজ বপন ও বীজতলার যত্ন, মূল জমি নির্বাচন ও জমি তৈরি, বীজ বপন ও রােপণ, পানি সেচ ও নিকাশ, আগাছা দমন ও মালচিং, পােকামাকড় দমন, রােগ দমন ও সময় মতাে ফসল সংগ্রহ।
৪. শাকসবজি চাষ পদ্ধতি
শাকসবজি চাষাবাদের বেশ কিছু পদ্ধতি দেশে বিদেশে চালু আছে। এগুলাের মধ্যে সচরাচর ব্যবহৃত কয়েকটি পদ্ধতি হলাে পর্যায় ক্রমিক চাষ পদ্ধতি, মিশ্র ফসল পদ্ধতি, রিলে ফসল পদ্ধতি, ফালি ফসল পদ্ধতি, সারিতে ফসল চাষ পদ্ধতি। নিম্নে কয়েকটি শাকসবজির চাষাবাদ পদ্ধতি বর্ণনা করা হলাে :
পালংশাক চাষ
ভিটামিন সমৃদ্ধ। বাংলাদেশে শীতকালে এর চাষ করা হয়।
পালংশাকের জাত :
পুষা জয়ন্তী, কপি পালং, গ্রিন, সবুজ বাংলা ও টকপালং। । এছাড়া আছে নবেল জায়েন্ট, ব্যানার্জি জায়েন্ট, পুষ্প জ্যোতি ইত্যাদি।
এই ধরনের আরও পোষ্ট পেতে আমাদের poramorso24.com নিয়মিত ভিজিট করুন । ধর্যসহকারে পড়ার জন্য ধন্যবাদ। বেলি ফুল চাষ পদ্ধতি ও রােগ বালাই ব্যবস্থাপনা
আরও পড়ুন