সংশােধনের ভিত্তিতে সংবিধানের শ্রেণিবিভাগ

সংশােধনের ভিত্তিতে সংবিধানের শ্রেণিবিভাগ

সংশােধনের ভিত্তিতে সংবিধানের শ্রেণিবিভাগ: সংশােধনের ভিত্তিতে সংবিধান দুই প্রকার। যথা –

  • ক. সুপরিবর্তনীয় সংবিধান ও 
  • খ. দুস্পরিবর্তনীয় সংবিধান। 

Table of Contents

সুপরিবর্তনীয় সংবিধান : 

সুপরিবর্তনীয় সংবিধানের যে কোনাে ধারা সহজে পরিবর্তন বা সংশােধন করা যায়। এ ক্ষেত্রে সংবিধান সংশােধন বা পরিবর্তন করতে কোনাে জটিলতার প্রয়ােজন হয় না । সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় আইনসভা এর যেকোনাে অংশ সংশােধন করতে পারে। ব্রিটিশ সংবিধান সুপরিবর্তনীয় সংবিধান। 

সংশােধনের ভিত্তিতে সংবিধানের শ্রেণিবিভাগ

সংশােধনের ভিত্তিতে সংবিধানের শ্রেণিবিভাগ

দুস্পরিবর্তনীয় সংবিধান : 

দুস্পরিবর্তনীয় সংবিধানের কোনাে ধারা সহজে পরিবর্তন বা সংশােধন করা যায় না, এ ক্ষেত্রে সংবিধান পরিবর্তন বা সংশােধন করতে হলে জটিল পদ্ধতির আশ্রয় নিতে হয়। সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় এ ধরনের সংবিধান পরিবর্তন করা যায় না। প্রয়ােজন হয় বিশেষ সংখ্যাগরিষ্ঠতা, সম্মেলন ও ভােটাভুটির। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান দুস্পরিবর্তনীয় ।ৎ

লিখিত সংবিধানের বৈশিষ্ট্য 

লিখিত সংবিধানের যেসব উল্লেখযােগ্য বৈশিষ্ট্য রয়েছে, সেগুলাে নিয়ে বর্ণিত হলাে

১. সুস্পষ্টতা : 

লিখিত সংবিধানের অধিকাংশ ধারা লিখিত থাকে বলে এটি জনগণের নিকট সুস্পষ্ট ও বােধমগ্য হয়। লিখিত সংবিধানে সাধারণত সংশােধন পদ্ধতি উল্লেখ থাকে বিধায় খুব সহজে পরিবর্তন বা সংশােধন করা যায় না। কিন্তু সমাজ প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল। লিখিত সংবিধান পরিবর্তিত সমাজের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারে না। এজন্য এটি কখনাে কখনাে প্রগতির অন্তরায় হিসেবে কাজ করে। তাছাড়া অনেক সময় সংবিধান সংশােধনের জন্য জনগণ বিপ্লব করতে বাধ্য হয়। 

২. স্থিতিশীলতা :

 এ সংবিধানে সব কিছু লিখিত থাকে বিধায় শাসক তার ইচ্ছামতাে এটি পরিবর্তন বা সংশােধন করতে পারে না। তাই লিখিত সংবিধান যেকোনাে পরিস্থিতিতে স্থিতিশীল থাকতে পারে । লিখিত সংবিধানের সকল ধারা জনগণ ও শাসক মেনে চলতে বাধ্য হয়। 

৩. যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারব্যবস্থার উপযােগী : 

লিখিত সংবিধান যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারব্যবস্থার জন্য উপযােগী। এ সংবিধানের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারব্যবস্থায় প্রাদেশিক ও কেন্দ্রীয় সরকারের মধ্যে ক্ষমতা বণ্টন করে দেওয়া হয়। সংবিধান লিখিত না হলে যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারব্যবস্থায় এরূপ ক্ষমতা বণ্টন সম্ভব হতাে না। 

যেমন- ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের মধ্যে লিখিত সংবিধানের মাধ্যমে ক্ষমতা বণ্টন করে দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, লিখিত সংবিধান যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের সফলতার পূর্বশর্ত। 

শাসক ও জনগণের সম্পর্ক : 

লিখিত সংবিধানে শাসকের ক্ষমতা কী হবে, জনগণ কী কী অধিকার ভােগ করবে তার উল্লেখ থাকে। এর ফলে শাসক ও জনগণ নিজেদের ক্ষমতা ও অধিকার সম্বন্ধে স্পষ্ট ধারণা লাভ করতে পারে। দলীয় কাজ : লিখিত সংবিধানে দোষ-ত্রুটি চিহ্নিত কর।

অলিখিত সংবিধানের বৈশিষ্ট্য 

অলিখিত সংবিধানের বৈশিষ্ট্য নিমে বর্ণনা করা হলাে

১. প্রগতির সহায়ক : 

সমাজ সর্বদা প্রগতির দিকে ধাবিত হয়। আর অলিখিত সংবিধান সমাজের | প্রগতির সাথে তাল মিলিয়ে সহজে পরিবর্তন করা যায়। অর্থাৎ এটি সমাজের পরিবর্তিত পরিস্থিতির সাথে সহজেই খাপ খাওয়াতে পারে। সুতরাং অলিখিত সংবিধান প্রগতির সহায়ক। কিন্তু অধিক পরিবর্তনশীলতা আবার অগ্রগতির পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে। 

জরুরি প্রয়ােজনে সহায়ক : 

অলিখিত সংবিধান যেহেতু সহজে পরিবর্তনীয়, তাই জরুরি প্রয়ােজন মিটাতে অলিখিত সংবিধান অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা পালন করে। তবে কোনাে কোনাে ক্ষেত্রে অলিখিত সংবিধান ঘন ঘন পরিবর্তনের ফলে কোনাে স্থায়ী নীতি ও কার্যক্রম হাতে নেওয়া যায় না। এর ফলে সরকারব্যবস্থা অস্থিতিশীল হতে পারে । 

বিপ্লবের সম্ভাবনা কম : 

এ সংবিধান সহজে পরিবর্তন করা যায় । জনগণের আশা-আকাক্ষা অনুযায়ীস অলিখিত সংবিধান পরিবর্তন হতে পারে বিধায় বিপ্লবের সম্ভাবনা কম থাকে। 

৪. বিবিধ : 

যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারব্যবস্থায় অলিখিত সংবিধান উপযােগী নয়। এ সংবিধানের অধিকাংশ বিষয় লিখিত না থাকায় রাষ্ট্র পরিচালনার বিষয় সম্পর্কে অনেকেরই সুস্পষ্ট ধারণা থাকে না।

উত্তম সংবিধানের বৈশিষ্ট্য

বিশ্বের সকল রাষ্ট্রের কোনাে না কোনাে সংবিধান রয়েছে। যে রাষ্ট্রের সংবিধান যত উন্নত, সে রাষ্ট্রের শাসনব্যবস্থা ততটা উত্তমভাবে পরিচালিত হয়। উত্তম সংবিধানের নিমােক্ত বৈশিষ্ট্যগুলাে রয়েছে। 

১. সুস্পষ্ট :

উত্তম সংবিধানে অধিকাংশ বিষয় লিখিত থাকে। এ সংবিধানের ভাষা সহজ, সরল ও প্রাঞ্জল হয়। এ কারণে উত্তম সংবিধান সকলের নিকট সুস্পষ্ট ও বােধগম্য হয়। 

২. সংক্ষিপ্ত : 

উত্তম সংবিধান সংক্ষিপ্ত প্রকৃতির। অপ্রয়ােজনীয় ও অপ্রাসঙ্গিক বিষয় উত্তম সংবিধানে স্থান পায় না। রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য উল্লেখযােগ্য বিধিবিধানগুলাে এ সংবিধানে উল্লেখ থাকে। 

৩. মৌলিক অধিকার : 

নাগরিকের মৌলিক অধিকার উত্তম সংবিধানে উল্লেখ থাকে। এর ফলে জনগণ তার অধিকার সম্পর্কে সচেতন হয়। তাছাড়া শাসক বা অন্য কেউ এ অধিকারে হস্তক্ষেপ করতে পারে না। 

৪. জনমতের প্রতিফলন : 

উত্তম সংবিধান জনমতের ভিত্তিতে প্রণীত হয়। এ সংবিধানে জনগণের চাহিদা ও আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটে। তাছাড়া সামাজিক রীতি-নীতি ও ঐতিহ্য এ সংবিধানে প্রতিফলিত হয়। 

৫. সুষম প্রকৃতির : 

উত্তম সংবিধান সুষম প্রকৃতির। এর অর্থ, উত্তম সংবিধান সুপরিবর্তনীয় ও দুস্পরিবর্তনীয় সংবিধানের মাঝামাঝি অবস্থান করে। অর্থাৎ এটি খুব সুপরিবর্তনীয় কিংবা খুব বেশি দুস্পরিবর্তনীয় নয়। এর ফলে উত্তম সংবিধান সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে সক্ষম।

৬. সংশােধন পদ্ধতি : 

উত্তম সংবিধানের কোনাে ধারার সংশােধন বা পরিবর্তন নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতে হয়। অর্থাৎ এ সংবিধানে সংশােধন পদ্ধতি উল্লেখ থাকে। সংবিধানের কোন অংশ কীভাবে সংশােধন করা হবে তা উত্তম সংবিধানে উল্লেখ থাকে। 

৭. রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি : 

রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি উত্তম সংবিধানে উল্লেখ থাকে। যেমন বাংলাদেশের সংবিধানে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি হিসেবে জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতাকে সন্নিবেশিত করা হয়েছে।

 ৮. জনকল্যাণকামী :

 দার্শনিক রুশাে বলেছেন, যে আইনে মানুষের কল্যাণ নাই তা উত্তম সংবিধান হতে পারে না।  

সুতরাং উত্তম সংবিধান হবে জনকল্যাণকামী । কোনাে সংবিধানে উপরে উল্লিখিত বৈশিষ্ট্যগুলাে থাকলে তাকে উত্তম সংবিধান বলা যাবে । 

সংশােধনের ভিত্তিতে সংবিধানের শ্রেণিবিভাগ

সংশােধনের ভিত্তিতে সংবিধান দুই প্রকার। যথা –

  • ক. সুপরিবর্তনীয় সংবিধান ও 
  • খ. দুস্পরিবর্তনীয় সংবিধান। 

সুপরিবর্তনীয় সংবিধান : 

সুপরিবর্তনীয় সংবিধানের যে কোনাে ধারা সহজে পরিবর্তন বা সংশােধন করা যায়। এ ক্ষেত্রে সংবিধান সংশােধন বা পরিবর্তন করতে কোনাে জটিলতার প্রয়ােজন হয় না । সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় আইনসভা এর যেকোনাে অংশ সংশােধন করতে পারে। ব্রিটিশ সংবিধান সুপরিবর্তনীয় সংবিধান। 

দুস্পরিবর্তনীয় সংবিধান : 

দুস্পরিবর্তনীয় সংবিধানের কোনাে ধারা সহজে পরিবর্তন বা সংশােধন করা যায় না, এ ক্ষেত্রে সংবিধান পরিবর্তন বা সংশােধন করতে হলে জটিল পদ্ধতির আশ্রয় নিতে হয়। সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় এ ধরনের সংবিধান পরিবর্তন করা যায় না। প্রয়ােজন হয় বিশেষ সংখ্যাগরিষ্ঠতা, সম্মেলন ও ভােটাভুটির। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান দুস্পরিবর্তনীয় ।ৎ

লিখিত সংবিধানের বৈশিষ্ট্য 

লিখিত সংবিধানের যেসব উল্লেখযােগ্য বৈশিষ্ট্য রয়েছে, সেগুলাে নিয়ে বর্ণিত হলাে

১. সুস্পষ্টতা : 

লিখিত সংবিধানের অধিকাংশ ধারা লিখিত থাকে বলে এটি জনগণের নিকট সুস্পষ্ট ও বােধমগ্য হয়। লিখিত সংবিধানে সাধারণত সংশােধন পদ্ধতি উল্লেখ থাকে বিধায় খুব সহজে পরিবর্তন বা সংশােধন করা যায় না। কিন্তু সমাজ প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল। লিখিত সংবিধান পরিবর্তিত সমাজের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারে না। এজন্য এটি কখনাে কখনাে প্রগতির অন্তরায় হিসেবে কাজ করে। তাছাড়া অনেক সময় সংবিধান সংশােধনের জন্য জনগণ বিপ্লব করতে বাধ্য হয়। 

২. স্থিতিশীলতা :

 এ সংবিধানে সব কিছু লিখিত থাকে বিধায় শাসক তার ইচ্ছামতাে এটি পরিবর্তন বা সংশােধন করতে পারে না। তাই লিখিত সংবিধান যেকোনাে পরিস্থিতিতে স্থিতিশীল থাকতে পারে । লিখিত সংবিধানের সকল ধারা জনগণ ও শাসক মেনে চলতে বাধ্য হয়। 

৩. যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারব্যবস্থার উপযােগী : 

লিখিত সংবিধান যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারব্যবস্থার জন্য উপযােগী। এ সংবিধানের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারব্যবস্থায় প্রাদেশিক ও কেন্দ্রীয় সরকারের মধ্যে ক্ষমতা বণ্টন করে দেওয়া হয়। সংবিধান লিখিত না হলে যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারব্যবস্থায় এরূপ ক্ষমতা বণ্টন সম্ভব হতাে না। 

যেমন- ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের মধ্যে লিখিত সংবিধানের মাধ্যমে ক্ষমতা বণ্টন করে দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, লিখিত সংবিধান যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের সফলতার পূর্বশর্ত। 

শাসক ও জনগণের সম্পর্ক : 

লিখিত সংবিধানে শাসকের ক্ষমতা কী হবে, জনগণ কী কী অধিকার ভােগ করবে তার উল্লেখ থাকে। এর ফলে শাসক ও জনগণ নিজেদের ক্ষমতা ও অধিকার সম্বন্ধে স্পষ্ট ধারণা লাভ করতে পারে। দলীয় কাজ : লিখিত সংবিধানে দোষ-ত্রুটি চিহ্নিত কর।

অলিখিত সংবিধানের বৈশিষ্ট্য 

অলিখিত সংবিধানের বৈশিষ্ট্য নিমে বর্ণনা করা হলাে

১. প্রগতির সহায়ক : 

সমাজ সর্বদা প্রগতির দিকে ধাবিত হয়। আর অলিখিত সংবিধান সমাজের | প্রগতির সাথে তাল মিলিয়ে সহজে পরিবর্তন করা যায়। অর্থাৎ এটি সমাজের পরিবর্তিত পরিস্থিতির সাথে সহজেই খাপ খাওয়াতে পারে। সুতরাং অলিখিত সংবিধান প্রগতির সহায়ক। কিন্তু অধিক পরিবর্তনশীলতা আবার অগ্রগতির পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে। 

জরুরি প্রয়ােজনে সহায়ক : 

অলিখিত সংবিধান যেহেতু সহজে পরিবর্তনীয়, তাই জরুরি প্রয়ােজন মিটাতে অলিখিত সংবিধান অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা পালন করে। তবে কোনাে কোনাে ক্ষেত্রে অলিখিত সংবিধান ঘন ঘন পরিবর্তনের ফলে কোনাে স্থায়ী নীতি ও কার্যক্রম হাতে নেওয়া যায় না। এর ফলে সরকারব্যবস্থা অস্থিতিশীল হতে পারে । 

বিপ্লবের সম্ভাবনা কম : 

এ সংবিধান সহজে পরিবর্তন করা যায় । জনগণের আশা-আকাক্ষা অনুযায়ীস অলিখিত সংবিধান পরিবর্তন হতে পারে বিধায় বিপ্লবের সম্ভাবনা কম থাকে। 

৪. বিবিধ : 

যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারব্যবস্থায় অলিখিত সংবিধান উপযােগী নয়। এ সংবিধানের অধিকাংশ বিষয় লিখিত না থাকায় রাষ্ট্র পরিচালনার বিষয় সম্পর্কে অনেকেরই সুস্পষ্ট ধারণা থাকে না।

উত্তম সংবিধানের বৈশিষ্ট্য

বিশ্বের সকল রাষ্ট্রের কোনাে না কোনাে সংবিধান রয়েছে। যে রাষ্ট্রের সংবিধান যত উন্নত, সে রাষ্ট্রের শাসনব্যবস্থা ততটা উত্তমভাবে পরিচালিত হয়। উত্তম সংবিধানের নিমােক্ত বৈশিষ্ট্যগুলাে রয়েছে। 

১. সুস্পষ্ট :

উত্তম সংবিধানে অধিকাংশ বিষয় লিখিত থাকে। এ সংবিধানের ভাষা সহজ, সরল ও প্রাঞ্জল হয়। এ কারণে উত্তম সংবিধান সকলের নিকট সুস্পষ্ট ও বােধগম্য হয়। 

২. সংক্ষিপ্ত : 

উত্তম সংবিধান সংক্ষিপ্ত প্রকৃতির। অপ্রয়ােজনীয় ও অপ্রাসঙ্গিক বিষয় উত্তম সংবিধানে স্থান পায় না। রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য উল্লেখযােগ্য বিধিবিধানগুলাে এ সংবিধানে উল্লেখ থাকে। 

৩. মৌলিক অধিকার : 

নাগরিকের মৌলিক অধিকার উত্তম সংবিধানে উল্লেখ থাকে। এর ফলে জনগণ তার অধিকার সম্পর্কে সচেতন হয়। তাছাড়া শাসক বা অন্য কেউ এ অধিকারে হস্তক্ষেপ করতে পারে না। 

৪. জনমতের প্রতিফলন : 

উত্তম সংবিধান জনমতের ভিত্তিতে প্রণীত হয়। এ সংবিধানে জনগণের চাহিদা ও আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটে। তাছাড়া সামাজিক রীতি-নীতি ও ঐতিহ্য এ সংবিধানে প্রতিফলিত হয়। 

৫. সুষম প্রকৃতির : 

উত্তম সংবিধান সুষম প্রকৃতির। এর অর্থ, উত্তম সংবিধান সুপরিবর্তনীয় ও দুস্পরিবর্তনীয় সংবিধানের মাঝামাঝি অবস্থান করে। অর্থাৎ এটি খুব সুপরিবর্তনীয় কিংবা খুব বেশি দুস্পরিবর্তনীয় নয়। এর ফলে উত্তম সংবিধান সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে সক্ষম।

৬. সংশােধন পদ্ধতি : 

উত্তম সংবিধানের কোনাে ধারার সংশােধন বা পরিবর্তন নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতে হয়। অর্থাৎ এ সংবিধানে সংশােধন পদ্ধতি উল্লেখ থাকে। সংবিধানের কোন অংশ কীভাবে সংশােধন করা হবে তা উত্তম সংবিধানে উল্লেখ থাকে। 

৭. রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি : 

রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি উত্তম সংবিধানে উল্লেখ থাকে। যেমন বাংলাদেশের সংবিধানে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি হিসেবে জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতাকে সন্নিবেশিত করা হয়েছে।

 ৮. জনকল্যাণকামী :

 দার্শনিক রুশাে বলেছেন, যে আইনে মানুষের কল্যাণ নাই তা উত্তম সংবিধান হতে পারে না।  

সুতরাং উত্তম সংবিধান হবে জনকল্যাণকামী । কোনাে সংবিধানে উপরে উল্লিখিত বৈশিষ্ট্যগুলাে থাকলে তাকে উত্তম সংবিধান বলা যাবে । 

আরও পড়ুন

  1. সাম্য বলতে কি বোঝায়
  2. সার্ক কেন গঠিত হয়েছিল (SAARC)
  3. সুনাগরিকের সংজ্ঞা
  4. ১৯৫৪ সালের নির্বাচনের গুরুত্ব ও তাৎপর্য – Importance of the Election of 1954