Breaking News

গরু মোটাতাজাকরণ দানাদার খাদ্য তালিকা

গরু মোটাতাজাকরণ দানাদার খাদ্য তালিকা: প্রাণী বেঁচে থাকার জন্য খাদ্য আবশ্যক। যা কিছু দেহে আহার্যরূপে গৃহীত হয় এবং পরিপাক, শশাষণ ও বিপাকের মাধ্যমে দেহে ব্যবহৃত হয় বা শক্তি উৎপাদন করে তাকে খাদ্য বলে। যেমন- গম, ভুট্টা, ঘাস, খৈল, ভুসি ইত্যাদি। 

গরু মোটাতাজাকরণ দানাদার খাদ্য তালিকা

গরু মোটাতাজাকরণ দানাদার খাদ্য তালিকা

প্রচলিতভাবে গবাদি পশুর খাদ্যকে প্রধানত নিম্নোক্ত দুইভাবে ভাগ করা যায়। যথা-

  • ১। আঁশ জাতীয় খাদ্য (Roughage feed)
  • ২। দানাদার খাদ্য (Concentrate feed) 

আঁশ জাতীয় খাদ্য 

রাফেজজাতীয় খাদ্যে প্রচুর পরিমাণ আঁশ (Fiber) এবং কম পরিমাণ শক্তি পাওয়া যায়। যেমন- যে কোনাে খড়, প্রাকৃতিক বা চাষ করা সবুজ ঘাস, হে, সাইলেজ প্রভৃতি। রাফেজ জাতীয় ঘাস গবাদিপশু চারণভূমি থেকে পেয়ে থাকে বা ঘাস কেটে পশুকে সরবরাহ করা হয়। 

তুলনামূলক বিচারে লিগিউম জাতীয় ঘাস যেমন-আলফা-আলফা, কাউপি, খেসারি, মাসকলাই, ইপিল-ইপিল ইত্যাদিতে বেশি পরিমাণ প্রােটিন, শক্তি, ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ সাধারণ ঘাসের চেয়ে বেশি থাকে। সাধারণ ঘাসের মধ্যে ভুট্টা, নেপিয়ার, প্যারা, জার্মান প্রভৃতি প্রধান। এ জাতীয় ঘাসের সুবিধা হলাে হেক্টর প্রতি এর ফলন অন্যান্য ঘাসের চেয়ে বেশি হয়।

দানাজাতীয় খাদ্য 

যে খাদ্যে কম পরিমাণে আঁশ এবং বেশি পরিমাণে শক্তি পাওয়া যায় তাকে দানাদার খাদ্য বলা হয়। দুধাল বা মাংস উৎপাদনকারী গবাদি পশুর ক্ষেত্রে শুধু আঁশজাতীয় খাদ্য সরবরাহ করলে কাঙ্ক্ষিত ফল পাওয়া যাবে না। সেক্ষেত্রে পর্যাপ্ত পরিমাণে দানাদার খাদ্য সরবরাহ করতে হবে। দানাজাতীয় খাদ্যকে নিম্নোক্ত উপায়ে ভাগ করা যায়

  • ক) প্রাণিজ উত্স-ফিসমিল, ব্লাডমিল, ফেদার মিল প্রভৃতি। 
  • খ) উদ্ভিজ উৎস-গম, ভুট্টা, বার্লি, সরগাম, খুদ, খৈল, কুঁড়া, ভুসি প্রভৃতি। 

এ ছাড়াও গবাদি পশুর খাদ্যে খনিজ উপাদান হিসাবে কিছু ঝিনুকের গুঁড়া, ডিমের খােসার গুঁড়া, হাঁড়ের গুঁড়া প্রভৃতি, ভিটামিন হিসাবে পাতাজাতীয় সবজি, ভিটামিন- মিনারেল প্রিমিক্স এবং খাদ্য অনুষঙ্গ হিসাবে কিছু এন্টিবায়ােটিক, হরমােন প্রভৃতি প্রয়ােজন হয়। 

বাংলাদেশে গবাদিপশুর খাদ্যের প্রাপ্যতা ঋতু ভেদে পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। সবুজ ঘাস বছরের একটি নির্দিষ্ট সময়ে পাওয়া যায় এবং এগুলাে যদি সঠিকভাবে সংরক্ষণ করে রাখা যায় তাহলে সারা বছর সবুজ ঘাসের অপর্যাপ্ততা থাকবে না।

কোনাে খাদ্য উপাদানের অপচয় ব্যতিরেকে ঘাস সংরক্ষণের জন্য এটা একটা কার্যকর ব্যবস্থা। সাইলেজ বায়ুরােধী পরিবেশে প্রয়ােজনীয় পুষ্টি উপাদানের পরিমাণ অক্ষুন্ন রেখে ক্ষতিকর ইস্ট, মােল্ড, ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ থেকে দীর্ঘদিন রক্ষা করে কার্যকরভাবে ব্যবহার করা যায় ।

হে 

অতি পরিচিত এবং গুরুত্বপূর্ণ সংরক্ষিত খাদ্য যা সারা বছর গবাদিপশুকে সরবরাহ করা যায়। সবুজ ঘাসকে শুকিয়ে এর আর্দ্রতা ২০% বা তার নিচে নামিয়ে এনে হে প্রস্তুত করা হয়। হে তৈরির জন্য এক বা একাধিক লিগিউম জাতীয় ঘাস চাষ করা যায় । 

লিগিউম ঘাসে সাধারণ ঘাসের তুলনায় বেশি মাত্রায় প্রােটিন, ভিটামিন ও খনিজ উপাদান থাকে। লিগিউম গাছের মূলে রাইজোবিয়াম নামক ব্যাকটেরিয়া বায়ুমণ্ডলের নাইট্রোজেন ধরে রাখে যা প্রােটিন গঠনের জন্য ব্যবহৃত হয়। তবে লিগিউম ছাড়াও সাধারণ ঘাস দিয়ে হে তৈরি করা যেতে পারে।

গুণগত মানের হে-এর বৈশিষ্ট্য 

হে এর খাদ্যমান ঘাসের গুণগতমানের উপর নির্ভর করে। হে-এর গুণগতমান ঘাসের পূর্ণতাপ্রাপ্তি, পাতার পরিমাণ, ঘাসের রং প্রভৃতি দ্বারা মূল্যায়ন করা হয়ে থাকে। 

  • ১। হে এর জন্য ব্যবহৃত ঘাস পাতা সমৃদ্ধ হতে হবে । হে পর্যাপ্ত পরিমাণে শুষ্ক হতে হবে। পাতার পরিমাণ এমন হতে হবে যাতে দুই-তৃতীয়াংশ পুষ্টি উপাদান পাতার মধ্যে থাকে। 
  • ২। হে উজ্জ্বল সবুজ বর্ণের হতে হবে যাতে প্রচুর পরিমাণে ক্যারােটিন বা ভিটামিন এ বিদ্যমান থাকে। বেশি আর্দ্রতা থাকার কারণে বা অত্যধিক তাপের কারণে হে বাদামি বর্ণের হতে পারে যেটা পুষ্টি উপাদান কমে যাওয়ার নির্দেশনা হিসাবে বিবেচিত হবে। 
  • ৩। হে আগাছামুক্ত হতে হবে।
  •  ৪। হে মােল্ড ও ধুলা বালিমুক্ত হতে হবে । 
  • ৫। হেতে খাওয়ার উপযােগী বৈশিষ্ট্যপূর্ণ গন্ধ থাকতে হবে। 

হে তৈরির পদ্ধতি 

গাছ কাটার সময় : 

হে তৈরির জন্য সঠিক পূর্ণতা প্রাপ্তির সময়ে গাছ কাটতে হবে। যত কম বয়সে গাছ কাটা যাবে, হে এর গুণগতমান তত বেশি হবে। যত বেশি বয়সে গাছ কাটা হবে, হে এর গুণগতমান তত কমে যাবে। তবে ফুল আসার সময় কাটাই উত্তম। 

সঠিকভাবে শুকাননা : 

হে তৈরির সময় গাছকে সঠিকভাবে শুকাতে হবে যাতে করে মােল্ড মুক্ত ও অতিরিক্ত তাপমুক্ত অবস্থায় সংরক্ষণ করা যায়। গাছগুলােকে দ্রুত শুকাতে হবে এবং অতিরিক্ত সূর্যের আলাে পরিহার করতে হবে যাতে করে ভালাে মানের হে এর বৈশিষ্ট্যগুলাে ধরে রাখা যায়। 

গাছ কেটে রােদে উলটপালট করে এমনভাবে নেড়ে দিতে হবে যাতে করে অতিমাত্রায় পাতা ঝরে না যায়।

আরও পড়ুন

  1. মাছের খাদ্য সংরক্ষণের পদ্ধতি
  2. কৃষি উপকরণ:ফসল বীজ ও বংশ বিস্তারক উপকরণ 
  3. কলা চাষ যেভাবে করবেন
  4. আনারস চাষ পদ্ধতি
  5. ধানের সমস্যা ও সমাধান

About sujan

Check Also

এইচএসসি পরীক্ষার রুটিন ২০২৫ HSC Routine 2025

এইচএসসি পরীক্ষার রুটিন ২০২৫| HSC Routine 2025 PDF Download

এইচএসসি পরীক্ষার রুটিন ২০২৫| HSC Routine 2025 PDF Download: পরীক্ষার্থী ও অভিবাবকদের অতি গুরুত্বপূর্ণ প্রথম …