জেন্ডার সংবেদনশীলতা, জেন্ডার সংবেদনশীল হওয়ার গুরুত্ব: নারী ও পুরুষ মিলেই হচ্ছে মানব জাতি। সভ্যতার শুরু থেকেই নারী-পুরুষ যার যার অবস্থান থেকে সমাজব্যবস্থার বিকাশে কার্যকর ভূমিকা রাখছে। কিন্তু সভ্যতার বিবর্তনের সাথে সাথে নারী-পুরুষের অবস্থান ও ভূমিকার পরিবর্তন হতে থাকে।
নারী-পুরুষের পরস্পরের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি বদলে যায়। তাদের মধ্যে বিভিন্ন সামাজিক ও আচরণিক ভিন্নতা দেখা দেয়। নারী-পুরুষের সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির এই সম্পর্ককে জেন্ডার বলে।
জেন্ডার সংবেদনশীলতা, জেন্ডার সংবেদনশীল হওয়ার গুরুত্ব

জেন্ডার মানুষের জৈবিক পরিচয়কে নির্দেশ করে না, বরং নারী-পুরুষের সামাজিক সম্পর্ক ও দৃষ্টিভঙ্গিকে নির্দেশ করে। অর্থাৎ জেন্ডার হচ্ছে নারী-পুরুষের কাঙ্ক্ষিত আচরণ যা পরিবার, সমাজ ও সংস্কৃতি থেকে বিকশিত হয় ।
যেকোনাে প্রতিষ্ঠান বা সমাজব্যবস্থায় নারী-পুরুষ সমঅবস্থানে থেকে সমান কর্মদক্ষতার সঙ্গে কাজ করবে এবং সমান সামাজিক মর্যাদা ও সমান আর্থিক সুবিধাদি ভােগ করবে। এই ধারণাকে সামনে রেখে যেকোনাে কর্মসম্পাদন প্রক্রিয়াকে জেন্ডার সংবেদনশীলতা বলে।
জেন্ডার সংবেদনশীল হওয়ার গুরুত্ব
জেন্ডার সংবেদনশীল হওয়ার মাধ্যমে নারী কিংবা পুরুষের বা বিশেষ লিঙ্গের প্রতি সমাজে বিদ্যমান ও প্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন ধরনের বৈষম্য কমে আসবে। নারী-পুরুষের সামাজিক অবস্থানে সাম্য প্রতিষ্ঠিত হলেই এ ধরনের বৈষম্যের বিলােপ ঘটবে।
জেন্ডার সংবেদনশীলতা যদি সমাজের সর্বস্তরে প্রতিষ্ঠিত হয় তাহলে নারী পুরুষের সামাজিক ও ব্যক্তিক নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। পারস্পরিক দায়িত্ববােধ ও শ্রদ্ধাবােধ তাদের মধ্যে এ ধারণা তৈরি করবে যে সমাজের প্রত্যেক ব্যক্তির নিজস্ব স্বাধীনতা ও মতামত প্রকাশের অধিকার রয়েছে ।
সমাজের প্রত্যেক ব্যক্তি যদি জেন্ডার সংবেদনশীল হয় তাহলে সমাজে নারী-পুরুষের মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে । সমাজের কেউ কাউকে তখন হীন করার চেষ্টা করবে না এবং বিশেষ কোনাে লিঙ্গের মানুষের প্রতি মানুষের বিাগ থাকবে না। জেন্ডার সংবেদনশীলতা মানুষের মনােভাবে পরিবর্তন ঘটায়। প্রত্যেকের অবস্থান ও মর্যাদা সম্পর্কে সচেতন করে।
এর ফলে মানুষের আচরণের পরিবর্তন ঘটে। জেন্ডার সংবেদনশীলতার মাধ্যমে নারী-পুরুষ উভয়েরই সমানভাবে কর্মসংস্থানের সুযােগ তৈরি হয়। পরিবারের ক্ষেত্রেও জেন্ডার সংবেদনশীল হওয়া প্রয়ােজন, এতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধার সম্পর্ক তৈরি হবে। পারিবারিক ও বন্ধন সুদৃঢ় হবে যা পারিবারিক ও সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।
জেন্ডার সংবেদনশীল হওয়ার উপায়

নারী-পুরুষ প্রত্যেকের উচিত আগে নিজের অবস্থান, মর্যাদা, ক্ষমতা ও কর্মদক্ষতা সম্পর্কে পুরােপুরি ওয়াকিবহাল হওয়া। অন্যের অবস্থান, মর্যাদা, ক্ষমতা ও কর্মদক্ষতাকে বিবেচনা করলে সমলিঙ্গ বা বিপরীত লিঙ্গের প্রতি কোনাে অশ্রদ্ধাজনক মনােভাব তৈরি হবে না।
নারী-পুরুষ প্রত্যেকে পরস্পরের প্রতি যদি কোনাে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি থাকে তা পরিবর্তন করতে হবে। পরস্পরের প্রতি নেতিবাচক মনােভাব বা ধারণা পােষণ করে জেন্ডার সংবেদনশীল হওয়া সম্ভব নয়। পরিবারই হচ্ছে প্রথম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
আর পরিবার থেকেই শুরু হয় প্রথম জেন্ডার বৈষম্য । তাই পরিবারকে সবার আগে জেন্ডার সংবেদনশীল হতে হবে। যদি পরিবার জেন্ডার সংবেদনশীল হয় তাহলে পরিবারের সদস্যরা জেন্ডার সংবেদনশীল হয়ে গড়ে উঠবে।
ক্যারিয়ার গঠনে জেন্ডার সংবেদনশীলতার ভূমিকা

জেন্ডার সংবেদনশীলতা জীবনের সকল ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। আমাদের দেশে কর্মক্ষেত্রেই এর প্রভাব বেশি। কর্মক্ষেত্রে নারী-পুরুষ সমানভাবে কাজ করবে, সমান সুবিধা ভােগ করবে, এটা নিয়ম হলেও বাস্তবতা ভিন্ন।
কর্মক্ষেত্রে জেন্ডার সংবেদনশীলতা বজায় রাখতে হলে কর্মী নিয়ােগ, কর্মবণ্টন, প্রশিক্ষণ, উপযুক্ত পরিবেশ, দায়িত্ব ও ক্ষমতা প্রদান, সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ, সুবিধাদি ও মর্যাদা এবং কর্মী মূল্যায়নে বিশেষ লিঙ্গকে প্রাধান্য না দিয়ে মেধা, শ্রম ও দক্ষতাকে প্রাধান্য দিতে হবে।
পরিবার, বিদ্যালয়, সমাজ কিংবা কর্মক্ষেত্রে জেন্ডার সংবেদনশীলতা বজায় থাকলে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবােধ, সম্প্রীতি, আস্থা বৃদ্ধি পায়। এতে কর্ম পরিবেশ সুন্দর হয়। তখন সবাই নিজ নিজ দক্ষতা ও যােগ্যতা অনুযায়ী কাজ করতে পারে। এই ধরনের আরও পোষ্ট পেতে আমাদের poramorso24.com নিয়মিত ভিজিট করুন । ধর্যসহকারে পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
আরও পড়ুন
https://t.me/s/officials_pokerdom/3529
https://t.me/s/iGaming_live/4866
https://t.me/s/IZZI_officials
https://t.me/s/Legzo_officials
https://t.me/s/RejtingTopKazino